এ বছর মেয়াদ শেষ হওয়া ১০ জন রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে রয়েছেন পেশাদার কূটনীতিক মো. মনিরুল ইসলাম (ইতালি) এবং আসুদ আহমেদ (গ্রিস)। তাদের দুই জনেরই পিআরএল শুরু হবে এপ্রিলে।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে খলিলুর রহমান (কানাডা) ও মোশাররফ হোসেন ভূইয়ার (জার্মানি) মেয়াদ শেষ হবে এপ্রিলে। মোহাম্মাদ সুফিয়ুর রহমান (সুইজারল্যান্ড) ও মেজর জেনারেল মো. আশিকুজ্জামানের (কুয়েত) মেয়াদ শেষ হবে মে মাসে। সুলতানা লায়লা হোসেন (পোল্যান্ড) ও মোহাম্মাদ আব্দুল হাইয়ের (থাইল্যান্ড) মেয়াদ শেষ হবে জুনে। জুলাই মাসে শাহাবুদ্দিন আহমদ (জাপান) ও সেপ্টেম্বরে মো. ফজলুল বারীর (ইরাক) মেয়াদ শেষ হবে।এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রক্রিয়া অনুযায়ী রাষ্ট্রদূতদের কাছে নির্দেশনা যায় অবিলম্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু প্রথা হচ্ছে মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বা দুই দিন আগে তারা রিপোর্ট করেন। তবে এতে প্রশাসনিক কাজের কোনও ব্যত্যয় হয় না।’
এদিকে আরেকটি সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে ৯ জন রাষ্ট্রদূতকে ফেরত আসার বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের হতাশা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পেশাদার কূটনীতিকদের সরকারি চাকরি শেষ হওয়ার পরে মেয়াদ বৃদ্ধির একটি প্রথা চলমান আছে। কোনও কোনও রাষ্ট্রদূতের ক্ষেত্রে এটি প্রায় তিন থেকে চার বছর হওয়ার কারণে মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রদূত হওয়ার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আমাদের সমস্যার কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিবকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি বোঝেন।’
একজন পেশাদার কূটনীতিক শেষের বছরগুলোতে রাষ্ট্রদূত হিসাবে কর্মরত থাকেন এবং তারা যদি ৫৯ বছরের পরেও রাষ্ট্রদূত হিসাবে কাজ করতে থাকেন তবে মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের সুযোগ কমে আসে। এর ফলে তাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয় বলেও তিনি জানান।
কারা হতে পারেন রাষ্ট্রদূত
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব অথবা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা রাষ্ট্রদূত হওয়ার যোগ্য। পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তারা প্রথা অনুযায়ী রাষ্ট্রদূত হয়ে থাকেন এবং সেটি চুক্তিভিত্তিক নয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাইরে থেকে যোগ্য যে কাউকে রাষ্ট্রপতি চুক্তিভিত্তিক রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগ দিতে পারেন।
বর্তমানে ৬০টি দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস আছে এবং সেখানে পররাষ্ট্র ক্যাডার বা বাইরে থেকে নিয়োগ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি। মোট রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশ পররাষ্ট্র ক্যাডার এবং সর্ব্বোচ্চ ৩০ শতাংশ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিধান আছে। সাধারণভাবে তাদের তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু এটি সবসময় অনুসরণ করা হয় না বলে তিনি জানান।