মুসাফির হিসেবে এ দুনিয়ায় এসেছে মানুষ। আমরা সবাই এখানে ক্ষণস্থায়ী জীবনের অধিকারী।অথচ ক্ষণস্থায়ী জীবনের কত রং, কত মোহ, কত মায়া। মানুষ মানুষকে ঠকায়, অত্যাচার করে।পিতার সম্পদ ভাইবোনকে না দিয়ে একাই ভোগদখল করে। ভাইবোনেরা প্রতিবাদ করলে ক্ষতি করার চেষ্টা করে।
আসলে দুনিয়ার মোহ যে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে।
মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, হে মানুষ! কীসে তোমাকে তোমার মহান রব সম্পর্কে (মোহ আচ্ছন্নে) বিভ্রান্ত করল?
দুনিয়ার মায়ায় পড়া লোক অনেক।
দুনিয়াতে অধিকাংশ শত্রুতার কারণ ও দুনিয়ার মায়া, বেশি ভোগ করার লোভ লালসা। অন্যের হক মেরে দেওয়ার চিন্তা।
হজরত মাসতুর ইবনে শাদ্দাদ (রা.) বর্ণনা করেন যে, রসুলে করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর শপথ! পরকালের তুলনায় দুনিয়ার উপমা শুধু এতটুকুই যেমন তোমাদের মাঝে কেউ নিজের একটি অঙ্গুলি সমুদ্রের পানিতে চুবিয়ে তুলে নিল। অতঃপর দেখ তাতে কতটুকু পানি লেগে এসেছে। (মুসলিম)।
আমাদের দুনিয়ার মোহ হতে তওবা করে পরকালের সুখের আশায় পুণ্যময় জীবন গঠন করার চিন্তাভাবনা করা উচিত। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্তও এমন। এর মাধ্যমে আল্লাহ (বান্দার) পাপসমূহ মুছে দেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৬৬৭; সহিহ বুখারি, হাদিস ৫২৮)।
অন্য হাদিস শরিফে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে আরেক জুমা, এক রমজান থেকে
আরেক রমজানের মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহকে মিটিয়ে দেয়; যদি ওই ব্যক্তি কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে (ওই ব্যক্তির যদি কবিরা গুনাহ না থাকে)। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ২৩৩)।
মাতা-পিতার সেবা, প্রতিবেশী, আত্মীয়তার হক রক্ষা করা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, ক্ষতি না করা, দান সদকা করা, আল্লাহর জিকির, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরুদ শরিফ সালাতু সালাম, পরোপকার, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা সবই নেক আমল, আমলে সালেহ তথা পুণ্যময় জীবন গঠনের সোপান।
আল্লাহতায়ালা বলেন, ইসলাম গ্রহণ করার পর যে কোনো নারী-পুরুষ আমলে সালেহ করবে, আমি তাকে দান করব উত্তম পবিত্র জীবন এবং তাদের সবচেয়ে ভালো কাজগুলোর ভিত্তিতে পুরস্কার দেব। ’ (সুরা আন-নাহল : আয়াত : ৯৭)।
সব গুনাহ পরিত্যাগ করে মহান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ মোতাবেক নিজের জীবনকে আলোকিত করতে হবে। নবী-রসুল, ওলি-আউলিয়াদের জীবনকর্ম নিজেদের জীবনে চর্চা করতে হবে। আল্লাহতায়ালা আমাদের পুণ্যময় জীবন গঠনের তৌফিক দান করুন। আমিন।