যুক্তরাজ্যের আদালতে প্রশ্নবিদ্ধ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড এবং ইতিহাসের ভবিষ্যৎ

জানি না যুক্তরাজ্যের বিচারকরা কী রায় দেবেন শেষপর্যন্ত এবং তা কীভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্ধৃত এবং (অপ)ব্যবহৃত হতে পারে মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধের বিচার আর ভিকটিমদের বিরুদ্ধে!

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি চোধুরী মুঈনুদ্দীন।

ফাইল ছবি

আর সব বছরের মতো এবারও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এসে চলে গেল। এবারের দিবসটি অন্যান্য বছরের চেয়ে কিছুটা আলাদা হওয়ার কথা ছিল, বিশেষ করে এই দিবসটির তাৎপর্য আর প্রাসঙ্গিকতার আলোকেই। এই দিবস ধরে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়ে আলোচনা উঠে আসার দরকার ছিল। সেটি একেবারেই ঘটেনি। নির্দিষ্ট যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা অন্তত এই দিনে ‘সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ’ ও সময়োপযোগী ছিল বলে মনে করছিলাম সেটি কোথাও উত্থাপিত হতে দেখিনি। তাই এই বিষয়ে লেখার তাগিদ অনুভব করছি। এই যে ওপরে লিখলাম ‘সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ’, কথাটা কিন্তু এতটুকু বাড়িয়ে বলিনি। লেখাটি পড়লে আপনার কাছেও বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে আশা করছি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়া অবধি এ সংক্রান্ত গত ১৫ বছরের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ৩টি ঘটনাকে যদি চিহ্নিত করি, তাহলে সম্ভবত এই লেখায় যে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করছি, সেটি হতে যাচ্ছে তার একটি। একটু ধারণা দিই— এমনকি হয়তো শাহবাগ

আন্দোলনও এই তিন প্রধান ঘটনার তালিকার মধ্যে পড়বে বলে আমার মনে হয় না!

আপনারা জানেন, ১৯৭১-এ বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের একজন হিসেবে চৌধুরী মুঈনুদ্দীন নামে একজনের বিচার হয়েছিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি-তে)। ২০১৩ সালে আসামির অবর্তমানে বিচারের রায়ে তাকে সন্দেহাতীতভাবে দোষী সাব্যস্ত করে আইসিটি এবং তাকে ফাঁসির দণ্ড প্রদান করা হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে বসবাস করায় সেই সাজা বাস্তবায়িত হয়নি। সম্প্রতি মুঈনুদ্দীনের পুরো ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে নতুন মোড় নিয়েছে।২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর অনলাইনে জঙ্গিবাদ বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানকার একটি ‘ফুটনোটে’ চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের নাম উল্লেখ করে বলা হয় যে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আইসিটির একটি রায়ও রয়েছে। ঘটনার শুরু সেখান থেকে। যুক্তরাজ্যে মুঈনুদ্দীনের আইনজীবীরা দাবি করে যে রিপোর্টে তার রায়ের এই বিষয়টির উল্লেখও নাকি তার বিরুদ্ধে মানহানির সামিল এবং এই মর্মে তারা স্বরাষ্ট্র দফতরকে আইনি নোটিশ পাঠায়। স্বরাষ্ট্র দফতর এই লিগ্যাল নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে সেই ফুটনোটটি সরিয়েও নেয় অনলাইন থেকে। তারপরও মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের হাইকোর্টে মানহানির মামলা দায়ের করেন।  

যুক্তরাজ্যের আদালতে মুঈনুদ্দীনের বক্তব্য ছিল, বাংলাদেশের আদালতের রায়কে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করার বিষয়টিই তার জন্য মানহানিকর, কারণ বাংলাদেশের আইসিটির নাকি কোনো ধরনেরই গ্রহণযোগ্যতা নেই। সুতরাং, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ১৯৭১-এর যে ধরনের ইতিহাস প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছে আর যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং রায় দেয়া হয়েছে তার সবই ভিত্তিহীন। এসবের ফলে নাকি যুক্তরাজ্যের একজন সম্মানিত নাগরিক হিসেবে মুঈনুদ্দীনের মানবাধিকার এবং সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। বিপরীত পক্ষ (অর্থাৎ, যুক্তরাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের আইনজীবীরা) পাল্টা অভিযোগ আনে এই বলে যে অন্য একটি দেশের আদালতে ইতোমধ্যে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তিকৃত একটি বিষয় পুনরায় উত্থাপন করে মুঈনুদ্দীন যেটা করার চেষ্টা করছেন তা হলো মূলত যুক্তরাজ্যের আইনব্যবস্থার অপব্যবহার (আইনে যাকে বলা হয় ‘অ্যাবিউজ অব প্রসেস’), সুতরাং মুঈনুদ্দীনের মামলাটি খারিজ করে দেয়া হোক।

হয়তো বুঝতে পারছেন, পরোক্ষভাবে এই মামলাটির অন্যতম বিচার্য বিষ‍য়ই হয়ে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাজ্যের আদালতে আইসিটি আর বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা যাচাই।

যুক্তরাজ্য হাইকোর্ট মুঈনুদ্দীনের মামলাটি খারিজের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে মুঈনুদ্দীন আপিল করেন যুক্তরাজ্যের উচ্চতর আপিল আদালতে। আপিল আদালতের ৩ জন বিচারকের মধ্যে ২ জন হাইকোর্টের নির্দেশের সঙ্গে একমত হন, কিন্তু ১ জন বিচারক মুঈনুদ্দীনের পক্ষে (অর্থাৎ মামলা খারিজের বিপক্ষে) রায় দেন। এই ১ বিচারকের রায়ের ভিত্তিতে মুঈনুদ্দীন আবার আপিল করেন— এবার যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টে। এটিই যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত।

গত ১ এবং ২ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টে মামলার বিষয়টির চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বিচারপতিসহ পাঁচ বিচারকের সামনে ওই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। মুঈনুদ্দীন এবং স্বরাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে দেশের প্রধান দুটি ল-ফার্মের আইনজীবীরা সেখানে পাল্টাপাল্টি অংশ নেন।

গত চার বছর ধরে এবং বিশেষ করে গত নয় মাস ধরে আমি এই মামলার পুরো বিষয়টি নিবিড়ভাবে অনুসরণ করেছি। সরাসরি মামলার পক্ষ না হতে পারার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নিজের সীমিত সাধ্যআর সামর্থ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব তার শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করে গেছি পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষ দুভাবেই এই মামলায় ১৯৭১-এর ভিকটিমদের এবং আইসিটির মূল দিকগুলো সামনে নিয়ে আসার। উদ্দেশ্য ছিল, দুপক্ষের আইনজীবীদের সাবমিশনে যে মৌলিক বিষয়গুলো একেবারেই উঠে আসেনি সেগুলোর পাশাপাশি তাদের এবং যুক্তরাজ্যের বিচারকদের করা জ্বলজ্যান্ত ভুলগুলো তুলে ধরা।

চূড়ান্ত বিচারে কতটুকু সফল হয়েছি তা এখনই বলা মুশকিল, কারণ, যুক্তরাজ্য সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত রায়ের জন্য অপেক্ষাধীন। তবে এটুকু উল্লেখ না করলেই না। যুক্তরাজ্য সুপ্রিম কোর্টে দু‌পক্ষের শুনানি শেষ হওয়া পর্যন্ত আমার অন্তত মনে হয়েছে, পুরো মামলাটির শুনানি আইসিটির জন্য ইতিবাচক হয়েছে তা বলা যাবে না। যুক্তরাজ্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের দৃষ্টিভঙ্গি হয়তো (ধরে নিচ্ছি যদিও) অনেকাংশেই নির্ভর করেছে মুঈনুদ্দীন এবং যুক্তরাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের দুই পক্ষের আইনজীবীদের কাছ থেকে তারা এ পর্যন্ত যা শুনেছেন বা যা শোনেননি শুধু তার ওপরই।

যেকোনো দিনই রায় হতে পারে। জানি না যুক্তরাজ্যের বিচারকরা কী রায় দেবেন শেষপর্যন্ত এবং তা কীভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্ধৃত এবং (অপ)ব্যবহৃত হতে পারে মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধের বিচার আর ভিকটিমদের বিরুদ্ধে!

যুক্তরাজ্য সুপ্রিম কোর্টের এই রায়টি কেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, সেটিজানিয়ে রাখাটা প্রয়োজন মনে করছি, সে কারণেই এই লেখাটি লেখা। চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের এই মানহানির মামলাটিকে যুক্তরাজ্য সুপ্রিম কোর্ট যদি সর্বতোভাবে এবং সর্বসম্মতিক্রমে খারিজ করে দেয় তাহলে তো কিছুই বলার নেই। সেই সম্ভাবনা এখনও আছে। তেমনটি হলে এই মামলাটি হয়তো ইতিহাসের বা আইনের বইয়ের কোনো একটি ছোট ফুটনোট হয়ে থেকে যাবে। কিন্তু রায়ে যদি এর বিপরীতটি ঘটে, অর্থাৎ, মুঈনুদ্দীনের মানহানির দাবি যদি টিকে যায়, তাহলে নিচের আশঙ্কাগুলো বাস্তব হয়ে ওঠার এক ভিন্ন বাস্তবতা তৈরি হবে আমাদের সবার জন্য। অনেকগুলো সম্ভাব্য ফলাফল আর আশঙ্কার মধ্যে শুধু চারটি উল্লেখ করছি নিচে।

যুক্তরাজ্য সুপ্রিম কোর্ট মুঈনুদ্দীনের পক্ষে (অর্থাৎ আইসিটির প্রক্রিয়ার বিপক্ষে) রায় দিলে সেই রায়টি দেশ-বিদেশে যুদ্ধাপরাধী আসামিপক্ষ উদ্ধৃত করবে আইসিটির পুরো প্রক্রিয়া এবং এর প্রতিটি বিচারের রায়কে চূড়ান্তভাবে প্রশ্নবিদ্ধভাবে করার কাজে। অবশ্যই, আইনি বিচারে যুক্তরাজ্যের রায় বাংলাদেশের আইসিটির রায়ের ব্যাপারে কোনো ধরনের বাধ্যবাধকতা তৈরি করে না, তবে প্রচার/অপ-প্রচারের বিভ্রান্তিকর রাজনীতিতে এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ঘোলা করার কাজে যুক্তরাজ্যের আদালতের রায় শক্তিশালী এক হাতিয়ার হয়ে উঠবে স্বাধীনতাবিরোধী পক্ষের হাতে। এই যে প্রথম আশঙ্কার কথাটি লিখলাম, তা হলো আমার লেখা চারটি ফলাফলের মধ্যে সবচেয়ে কম ক্ষতিকর, কারণ বাকিগুলো আরও সুদূরপ্রসারী!

২) যদি যুক্তরাজ্যের আদালতে বাংলাদেশের আইসিটির বিরুদ্ধে করা সমালোচনাগুলো ধোপে টিকে যায়, তাহলে এর প্রভাব হবে মুঈনুদ্দীনের মামলা ছাড়িয়ে আরও বিস্তৃত। কারণ, তখন সমালোচনাগুলো পশ্চিমের এক গুরুত্বপূর্ণ আদালতের বদৌলতে এক ধরনের আইনি বৈধতার সিল পেয়ে যাবে। এই বিষয়টিকে তখন আইসিটির বিচারে দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিই ব্যবহার করতে পারবে এ জাতীয় কৌশলগত মানহানি মামলায়। তাদের উদ্দেশ্য হবে মুক্তিযুদ্ধ ইস্যুতে নিজেদের কৃতকর্মের ইতিহাস চাপা দেয়া। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের আইনব্যবস্থা ও আদালত এমনিতেই এ জাতীয় মানহানি মামলার ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় ফোরাম হয়ে উঠেছে সারাবিশ্বের অন্য সব ব্যবস্থার তুলনায়। এই সুযোগটি ঢালাওভাবে নেয়ার সুযোগ তৈরি হবে তখন যুদ্ধাপরাধী পক্ষের দিক থেকে। এভাবে ১৯৭১-এর প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস একটু একটু করে বিকৃত হতে থাকবে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে।

৩)পূর্ণাঙ্গ বিচার প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশের আইসিটির রায়ের পরও যদি দণ্ডিত একজন অপরাধী এই রায়কে মানহানিকর বলে যুক্তরাজ্যের আদালতে উৎরে যেতে পারে, তাহলে ১৯৭১-এ সংঘটিত অপরাধগুলো (গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ) নিয়ে বর্তমান ও ভবিষ্যতের সব ধরনের গবেষণা আর লেখালিখির কাজ আর উদ্যোগগুলো এক বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে। লেখক এবং গবেষকদের কাজগুলো করতে হবে প্রতি পদে মানহানি মামলার খড়গ মাথায় নিয়ে। আইন বিষয়ে যাদের কিছুমাত্র ধারণা আছে তারা জানবেন— কাউকে হয়রানি করতে বা আর্থিকভাবে সর্বস্বান্ত করতে মানহানি মামলার কোনো জুড়ি নেই।

৪) বাংলাদেশে গণহত্যার বৈশ্বিক সার্বজনীন স্বীকৃতি অর্জনের যে প্রজন্মব্যাপী আন্দোলন মাত্র শুরু হয়েছে, তার পুরোটাই এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্মুখীন হবে। কারণ, ১৯৭১-এ সংঘটিত গণহত্যা আর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ আর অপরাধীদের কৃতকর্মের ইতিহাস একমাত্র যে আইনি ফোরামে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বা আইসিটি। তাই এটা কোনো কাকতালীয় ব্যাপার নয় যে ১৯৭১-এর অপরাধীপক্ষ সবসবময়ই তাদের আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু করেছে এই আইসিটিকে। শুধু একটিমাত্র লক্ষ্য নিয়ে, আর তা হলো এই ট্রাইব্যুনালকে গোটা বিশ্বের কাছে অগ্রহণযোগ্য দেখানো বা একে যতভাবে সম্ভব প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলা। যুক্তরাজ্যে মুঈনুদ্দীনের মামলারও প্রধান উদ্দেশ্য সেটি। তাই, ট্রাইব্যুনালে মাধ্যমে সন্দেহাতীতভাবে প্রতিষ্ঠিত  অপরাধগুলোকে নতুন করে বিতর্কের সম্মুখীন করা গেলে গণহত্যার স্বীকৃতি অর্জনের আন্দোলনই বিতর্কের সম্মুখীন হয়।

যুক্তরাজ্য সুপ্রিম কোর্টের রায়টি উপরোক্ত বিষয়গুলোর কারণেই আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং এর ওপর অনেককিছুই নির্ভর করবে। আশা করি এই লেখাটি পরিস্থিতির সম্ভাব্য গুরুত্ব অনুধাবনের পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে।

এই পদক্ষেপ নির্ধারণের পথে যে প্রশ্নের উত্তরগুলো আমাদের প্রথমেই খুঁজতে হবে সেগুলো হলো, ১) চৌধুরী মুঈনুদ্দিনের মামলাটি যুক্তরাজ্যে এতদূর পর্যন্ত নির্বিঘ্নে গড়াতে পারল কীভাবে তা খুঁজে বের করা; ২) মুঈনুদ্দীনের পুরো ঘটনার অন্য আরও প্রতিটি ধাপে (যেমন: এক্সট্রাডিশনের মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশে হাজির করায় ব্যর্থতা, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ একতরফাভাবে আসামিপক্ষের প্রত্যাহার) বাংলাদেশ সরকারের যে পদক্ষেপগুলো নেয়ার কথা ছিল তা সঠিকভাবে নেয়া হয়েছিল কিনা; ৩) আইসিটিতে দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আর সব পলাতক অপরাধীর শাস্তি কার্যকর করা বা তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বা হচ্ছে কিনা; ৪) ট্রাইব্যুনালে চলমান বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে সরকার এবং সংশ্লিষ্টদের বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি আসলে ঠিক কি সেটা জনগণের কাছে স্পষ্ট করা ইত্যাদি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযু্দ্ধে রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রদানকারী রাজনৈতিক দলটির (যে দল এখন বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতায়) কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা, তার আলোকে এগুলো আমার ন্যূনতম জিজ্ঞাসা।

যুক্তরাজ্যের আদালত যদি মুঈনুদ্দীনের বিপক্ষে রায় দেয়, তাহলে বাংলাদেশ সরকারের করণীয় হবে এবার তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আর রায় যদি তার পক্ষে যায়, তাহলে আমাদের নাগরিক সমাজ, আমাদের মিডিয়া, আমাদের বুদ্ধিজীবীদের এক দীর্ঘ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। ১৯৭১-এ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ইতিহাস সারা বিশ্বের কাছে সঠিক এবং জোরালো‌ভাবে তুলে ধরার দায়িত্ব এ সময়ের বুদ্ধিজীবী এবং শিক্ষিত সমাজেরই। সরকারের তো বটেই। কারণ, তাঁদের আত্মত্যাগের কারণেই আজকের বাংলাদেশ।

মামলাযুক্তরাজ্যযুদ্ধাপরাধযুদ্ধাপরাধী১৯৭১রায়বিচারযুদ্ধাপরাধীদের বিচার।মহান মুক্তিযুদ্ধবুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডযুক্তরাজ্যে আইনযুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিফাঁসির দণ্ডচৌধুরী মুঈনুদ্দীনআন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালমানহানির মামলাযুক্তরাজ্যের আদালত

এ সম্পর্কিত খবর

|

কেবল রক্তমাংসের মানুষ পেটেন্ট পেতে পারে: যুক্তরাজ্য সুপ্রিম কোর্ট

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।

জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে কোনো লাভ হবে না

ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত চেয়েছে বাংলাদেশসহ ৫ দেশ

ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত চেয়েছে বাংলাদেশসহ ৫ দেশ

লন্ডনে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে গম্ভীর মুখে হেঁটে যাচ্ছেন ডেভিড ক্যামেরন। তবে নতুন দায়িত্ব পেয়ে সেখান থেকে তিনি হাসি মুখেই বেরিয়ে আসেন। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, বরখাস্ত সুয়েলা ব্রাভারম্যান

আরও পড়ুন

রেকর্ড গড়া জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল বাংলাদেশ

রেকর্ড গড়া জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের পেস আগুনে পুড়ে ছাই 
নিউ জিল্যান্ড

বাংলাদেশের পেস আগুনে পুড়ে ছাই নিউ জিল্যান্ড

টিভি সূচি (শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩)

টিভিতে শনিবারের খেলা

আলভারেসের নৈপুণ‍্যে ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা সিটির

আলভারেসের নৈপুণ‍্যে ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা সিটির

আরও

মতামত

একাত্তরের বাহান্ন, বাহান্নের একাত্তর: মুক্তির স্বপ্ন আর কতদূর

এম আর খায়রুল উমাম

জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে কোনো লাভ হবে না

শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক

যুক্তরাজ্যের আদালতে প্রশ্নবিদ্ধ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড এবং ইতিহাসের ভবিষ্যৎ

রায়হান রশিদ

সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিহত করা যাবে?

মোনায়েম সরকার

প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক: তৌফিক ইমরোজ খালিদী

খবর
ফিচারস
মতামত
খেলা
নাগরিক সাংবাদিকতা
অন্যান্য

Follow Us

Disclaimer & Privacy PolicyAbout UsContact Us

Copyright © 2023, bdnews24

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *