স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন ভোটারদের ভূমিকা

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা সংসদীয় আসনে নির্বাচনী গণসংযোগে ব্যস্ত। বিএনপি নিবার্চনে না এলেও নিবন্ধিত ৪৪টির মধ্যে ২৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে

নির্বাচন কমিশনের তালিকা অনুযায়ী, ভোটের মাঠে আছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মুকিত), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (পাঞ্জা), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি  ও তৃণমূল বিএনপি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটারের উপস্থিতিতে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে চায় নির্বাচন কমিশন।

বিএনপি নির্বাচন বর্জন করার পরও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যুক্ত হয়েছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।  

দেশের প্রায় ১২ কোটি ভোটার নিয়ে এই নির্বাচনে প্রথমবার ভোট দেবেন প্রায় দেড় কোটি নতুন ভোটার।এর বাইরে আরও এক কোটি তরুণ ভোটার আছেন। সব মিলিয়ে আড়াই কোটি নতুন ভোটার বড় প্রভাব ফেলবেন এই নির্বাচনে।

নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্র সুসংহত করার ক্ষেত্রে নতুন ভোটারদের অংশগ্রহণ তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়ন এবং ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন ভোটারদের ভূমিকা প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এবার ক্ষমতাসীন দলও প্রার্থী মনোনয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছে তারুণ্যকে। সব মিলিয়ে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যেখানে অংশ নেবেন তরুণরা।

নতুন ভোটারদের বড় অংশই এখনো শিক্ষার্থী। প্রথমবার ভোট দিতে যাওয়ার ব্যাপারে অনেকের মাঝেই উচ্ছ্বাস কাজ করছে। ঢাকায় মেট্রোরেল, পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পদ্মাসেতু,  চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেলসহ বহু উন্নয়ন প্রকল্প তাদের সামনে দৃশ্যমান। তারা চান, এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক। শুধু অবকাঠামো নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রেই মানুষের জীবনমানের সুষম উন্নয়ন হোক, এমন প্রত্যাশা তরুণদের। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যও আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকুক, এমনটাই চান তারা। তরুণ ভোটাররা নির্বাচনে সহিংসতা দেখতে চান না। দেশের রাজনীতির নেতৃত্বে যে-ই আসুক না কেন, সবার প্রত্যাশা-যোগ্য নেতৃত্ব; যাদের হাত ধরে অব্যাহত থাকবে দেশের অগ্রযাত্রা।

নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবেও অনেকে জড়িত। তারা তৃতীয় পক্ষকে ক্ষমতায় আনতে চায়। এই গোষ্ঠীই বিদেশে বসে হুকুম দিয়ে মানুষ হত্যা করে, বাস-ট্রেন পোড়ায়। ২০১৩ সাল থেকে শুরু হওয়া অগ্নিসন্ত্রাস তারা থামায়নি আজও। তরুণ প্রজন্মের ভোটাররা এই অগ্নিসন্ত্রাসের বিপক্ষে। তারা চায়, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলোই দেশকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুক।

দেশের অর্থনীতি ও ভবিষ্যৎ বাঁচাতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর করতে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

তরুণরা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস বাঁচিয়ে রাখতে চায়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনকে তাদের জীবনে প্রয়োগ করতে চায়। তারা বাংলাদেশের ইতিহাস, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নিজেদের মধ্যে লালন করতে চায়। তরুণরা তাদের মেধার মূল্যায়ন চায়, নিরাপদ জীবন চায়, শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি চায়। দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চায়। স্বপ্ন দেখতে ও স্বপ্ন দেখাতে চায়। এবারের নির্বাচনে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে তারা দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হতে চায়, শোনাতে চায় জীবনের জয়যাত্রার গল্প।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *