বগুড়া প্রতিনিধি
এনআরবিসি ব্যাংকের উপ-শাখার ভল্ট ভেঙে প্রায় ১০ লাখ টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছিল
বগুড়ায় এনআরবিসি ব্যাংকের উপ-শাখার ভল্ট ভেঙে প্রায় ১০ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় জড়িতদের তিন দিনেও শনাক্ত করা যায়নি। ব্যাংকের ভেতরে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে দুই জনকে টাকা চুরি করতে দেখা গেলেও সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রাত ১০টা পর্যন্ত তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে গত শুক্রবার রাতের কোনও একসময়ে ব্যাংকের বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নের পল্লীমঙ্গল হাট উপশাখায় এ চুরির ঘটনা ঘটে।সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, ‘ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা চুরির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাখারিয়া ইউনিয়নের পল্লীমঙ্গল হাট এলাকায় আবদুর রাজ্জাকের দোতলা ভবনের নিচতলায় এনআরবিসি ব্যাংকের উপ-শাখা। ডানপাশে বেসরকারি সংস্থা এসকেএসের অফিস। এছাড়া ভবনের মালিক ও তিনটি পরিবার ওই ভবনে থাকেন।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘এনআরবিসি ব্যাংকের পল্লীমঙ্গল হাট উপ-শাখায় কোনও নিরাপত্তাপ্রহরী ছিল না। বাইরে ছিল না সিসিটিভি ক্যামেরা। গত বৃহস্পতিবার লেনদেনের পর প্রায় ১০ লাখ টাকা ভল্টে রেখে দুদিনের সাপ্তাহিক ছুটিতে যান কর্মকর্তারা। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা শুক্রবার রাতের কোনও একসময়ে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ১০ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। শনিবার সকালে ব্যাংকের দরজা খোলা দেখে বিষয়টি জানাজানি হয়। টাকা উদ্ধার এবং দুর্বৃত্তদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।’
এনআরবিসি ব্যাংকের পল্লীমঙ্গল উপ-শাখার ব্যবস্থাপক রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শাখায় ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত রাখার অনুমোদন ছিল। বৃহস্পতিবার ব্যাংকিং কার্যক্রম শেষে ৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ভল্টে রাখা হয়েছিল। শনিবার সকালে জানতে পারি, দুর্বৃত্তরা দরজার তালা ভেঙে কক্ষে ঢুকে ভল্ট ভেঙে ৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা নিয়ে যায়। চুরির আগে ব্যাংকের ভেতরের সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিল তারা। এ ব্যাপারে সদর থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি আমরা।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘দোতলা ওই ভবনে মালিকসহ চার পরিবার থাকার পরও দুর্বৃত্তরা কীভাবে নিচতলার দরজার তালা ভেঙে ব্যাংকের ভেতরে ঢুকেছিল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। পরিচিত কারও সহযোগিতা ছাড়া এমন ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়। চুরির সঙ্গে জড়িতরা খুবই অভিজ্ঞ। কারণ তারা চুরির আগে ব্যাংকের ভেতরের সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। সবগুলো বিষয় সামনে রেখে ঘটনার তদন্ত করছি আমরা। আশা করছি, চোরদের শনাক্ত করতে পারবো।’
ব্যাংকের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ৪৪ মিনিট ২৯ সেকেন্ডে জ্যাকেট ও ফুলপ্যান্ট পরিহিত খালি পায়ে ও মুখে মাফলার বাঁধা দুই ব্যক্তি ব্যাংকে ঢোকে। তাদের হাতে টর্চলাইট ছিল। সঙ্গে ছিল তালা কাটার যন্ত্র ও ধারালো অস্ত্র। ভেতরে ঢুকেই সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তারা। পরে বুথের একটি ভল্টের তালা কেটে টাকাগুলো নিয়ে যায়।