বিএনপির ডাকা নবম দফা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধে দ্বিতীয় দিন সোমবার রাজধানীতে স্বাভাবিক রয়েছে গণপরিবহন চলাচল। কোথাও কোথায় যাটজটও দেখা গেছে। সকাল থেকে রাজধানীর প্রতিটি সড়কেই চলছে বাস-রিকশা। অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য দেখা গেছে। এদিন গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত যান চলাচল বেড়েছে। কোথাও কোথাও দেখা গেছে চিরচেনা যানজট। যাত্রী কম থাকলেও দুরপাল্লার কিছু গাড়ি ছেড়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের অন্যান্য দিনের মতই বাস, মিনিবাস, অটোরিকশা, পণ্যবাহী মিনিট্রাক, মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। এছাড়া রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাও চলতে দেখা গেছে।
মিরপুর-১ নম্বর, ১০ নম্বর, কল্যাণপুর, শ্যামলী, সাইন্স ল্যাব, নিউমার্কেট, প্রেসক্লব, গুলিস্তান, মতিঝিল এলাকার বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। স্বাভাবিক রয়েছে পল্টন মোড় থেকে প্রগতি সরণি, বিমানবন্দর, মতিঝিল ও ডেমরা রুটের যান চলাচলও। প্রায় প্রতিটি এলাকায় দেখা গেছে যানজট। যাত্রী কম থাকলেও গাবতলী বাস টার্মিনালে থেকে দুপুরের পর
এদিকে নবম দফায় ডাকা সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার ডাকা সর্বাত্মক অবরোধের সমর্থনে সোমবার সকালে রাজধানীর পল্টনে বিক্ষোভ মিছিল
করেছে বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও তফসিল বাতিলের দাবিতে এ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের নেতৃত্বে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড় থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত এ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা অবরোধের স্বপক্ষে বিভিন্ন স্লোগানসহ এই বিক্ষোভ মিছিল করার সময় দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশ এসে ধাওয়া দিলে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
বিকেলে রাজশাহী যেতে গাবতলী বাস টার্মিনালে যাওয়া জাহিদ হাসান বলেন, এসব হরতাল-অবরোধে জনগণের ভোগান্তি বাড়ে। জীবনের তাগিদেই সব কিছুই চলছে, কিছুই থেমে থাকে না। কিন্তু এই হরতাল-অবরোধের নামে দুয়েকটি যানবাহনে আগুন দিয়ে আতঙ্কের সৃস্টি করা হচ্ছে। এতে আমাদের মত সাধারণ জনগণের ভোগান্তিই শুধু বাড়ছে।
সকাল থেকেই রাজধানীর প্রায় প্রতিটি মোড়েই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। এছাড়া, রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রার্থীদের সমর্থনে সকাল থেকেই মিছিলি করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
অবরোধ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিজিবি ও র্যাবের টহল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সারাদেশে ১৫৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশের জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে ২০ প্লাটুন বিজিবি।
অপরদিকে অবরোধে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীতে ১৩২টিসহ সারাদেশে ৪২৪টি টহল দল মোতায়েন করেছে র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যেকোনো ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গোয়েন্দারা ছদ্মবেশে নজরদারি অব্যাহত রেখেছেন। যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে নিরাপত্তায় দেশের বিভিন্ন স্থানে দূরপাল্লার গুরুত্বপূর্ণ
ও পণ্যবাহী পরিবহন টহলের মাধ্যমে এস্কর্ট (সুরক্ষা প্রহরা) দিয়ে নিরাপদে গন্তব্যস্থলে র্যাব পৌঁছে দিচ্ছে।