দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৭৪৭জন স্বতন্ত্র প্রার্থী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ৩০০টি আসনের বিপরীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রসহ ২ হাজার ৭১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে নিবন্ধিত ২৯টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী রয়েছেন ১ হাজার ৯৬৪ জন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ৭৪৭ জন। রিটার্নিং কার্যালয় থেকে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো প্রাথমিক তথ্যে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

এদিকে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) থেকেই রিটার্নিং কার্যালয়গুলোতে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে, চলবে আগামী ৪ ডিসেম্বর সোমবার পর্যন্ত। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে ৪৪টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত রয়েছে। এর মধ্যে বিএনপিসহ সমমনা ও সরকারবিরোধী ১৫টি দল নির্বাচনের বাইরে রয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতাসীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ (নৌকা) ২৯৮টি আসনে মোট মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে ৩০৩টি। পাঁচটি আসনে তাদের দুজন করে প্রার্থী রয়েছে। অপরদিকে জাতীয় সংসদে বিরোধীদল জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) ২৮৬টি আসনে ৩০৪টি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি আসনে তাদের দুজন করে প্রার্থী রয়েছে। জাতীয় পার্টি ও তৃণমূল বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল ৩০০ আসনে প্রার্থী মনোনয়নের ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত সেটা দেখা যায়নি।

অন্যান্য দলের মধ্যে জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) ২১৮টি, তৃণমূল বিএনপি (সোনালী আঁশ) ১৫১টি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি (আম) ১৪২টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) ১১৬টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (মশাল) ৯১টি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা) ৮২টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) ৭৪টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফোরাম-বিএনএফ (টেলিভিশন) ৫৫টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম (নোঙর) ৪৯টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন-বিটিএফ (ফুলের মালা) ৪৭টি, ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ৪৫টি, ইসলামি ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ৩৯টি, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট (মোমবাতি) ৩৭টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩৪টি এবং ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩৩টি, গণফ্রন্ট (মাছ) ২৫টি, জাতীয় পার্টি-জেপি (বাইসাইকেল) ২০টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি) ১৮টি, বিকল্পধারা (কুলা) ১৪টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ১৪টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল) ১৩টি, গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) ১২টি, গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৯টি, সাম্যবাদী দল (চাকা) ছয়টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ (কুঁড়েঘর) ছয়টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল (হাত পাঞ্জা) পাঁচটি ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন) দুটি আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে।

এদিকে বিএনপিসহ (ধানের শীষ) নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি (ছাতা), ইসলামী আন্দোলন (হাতপাখা), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি (কাস্তে), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি (তারা), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মই), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি (গরুর গাড়ি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (খেজুরগাছ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ (গাভী), বাংলদেশ খেলাফত মজলিস (রিকশা), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (কোদাল), খিলাফত মজলিস (দেওয়াল ঘড়ি), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম (সিংহ), ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ (আপেল) ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (মোটরগড়ি) নির্বাচনের অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তারা তা বাছাই করবেন ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রবিবার)। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। আর ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৪২ হাজার ১০৩টি।

এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। ওই নির্বাচনে বিএনপিসহ ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল। জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশ বসেছিল ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *