ভিক্ষার টাকায় কেনা মনোনয়নপত্র বাতিল, অভাবে করা হচ্ছে না আপিল

ময়মনসিংহ: ভিক্ষা করে জমানো টাকা দিয়ে ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন আবুল মনসুর (৭০)। কিন্তু ভোটারের স্বাক্ষর নিয়ে গরমিল থাকায় তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল ঘোষণা করেছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এখন টাকার অভাবে আপিল করতে না পেরে নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়ার আশঙ্কায় মনোকষ্টে ভুগছেন এ প্রার্থী।      

গত ৩০ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল আহমেদের কার্যালয়ে আবুল মনসুর মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

এ নিয়ে ভোটের মাঠে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের তালিকায় গরমিল থাকায় গত রোববার (৩ ডিসেম্বর) তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।

এতে তার সমর্থকরা মন খারাপ করেছেন বলে দাবি আবুল মনসুরের।          

তিনি বলেন, স্ত্রী, চার ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সংসার আমার।

আগে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও এখন বয়সের কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই বর্তমানে ভিক্ষা করেই জীবিকা নির্বাহ করছি। সেই সঙ্গে ছেলেরা দিনমজুর দিয়ে পরিবারে সহযোগিতা করছে। এভাবেই চলছে আমার সংসার।    

আবুল মনসুর বলেন, জীবনে অনেক নির্বাচন দেখছি। নির্বাচনের আগের প্রার্থীরা অনেক কথা বলে, কিন্তু পাস হয়ে গেলে কেউ আগের কথা মনে রাখে না। এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব খারাপ। গরিবরা কোনো কার্ড চাইলে পায় না, পাইলেও টাকা দিতে হয়। মূলত এসব কারণেই আমি বিগত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে উপজেলার ৭ নং বৈলর ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলাম। সেখানে পাস করতে পারিনি। তাই এবার এলাকার মানুষের দুঃখের কথা চিন্তা করে এমপি প্রার্থী

হইছিলাম। কিন্তু সমর্থনকারীদের তালিকায় গরমিল আছে বলে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেছে।     

এতে তার সমর্থকরা কষ্ট পেয়েছেন দাবি করে তিনি বাংলানিউজকে আরও বলেন, টাকার অভাবে আপিল করতে পারছি না। এজন্য আমি সবার সহযোগিতা চাই। আমি নির্বাচন করতে পারলে এলাকার মানুষ অনেক খুশি হইত।  

এদিকে আবুল মনসুরের মনোনয়নপত্র দাখিল এবং শতকরা একভাগ ভোটারের তালিকায় গরমিল থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ।  

এমপি প্রার্থী আবুল মনসুর উপজেলার ৭নং বৈলর ইউনিয়নের মঠবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। এলাকায় তিনি ভিক্ষুক হিসেবেই পরিচিত।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *